খুলনা, বাংলাদেশ | ২১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬
  সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা মারা গেছেন
  গাজায় আরও ১৩৮ জনকে হত্যা করলো ইসরায়েল

ববিতে বাস সংকট প্রকট, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

ববি প্রতিনিধি

তীব্র পরিবহন সংকট ভুগছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) শিক্ষার্থীদরা। এতে তাদের দৈনন্দিন জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ১১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র ২২টি বাস । বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাহিরে থাকায় তাদের যাতায়াতের একমাত্র বাহন হচ্ছে এই বাস কিন্তু পর্যাপ্ত বাস না থাকায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে বসবাস করায় তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় বাসের সংখ্যা অনেক কম হওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত দাঁড়িয়ে, এমনকি ঝুলে ঝুলে যাতায়াত করতে হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত ২২টি বাসের মধ্যে ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এবং বাকি ১০টি (৭টি দোতলা ও ৩টি একতলা) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) থেকে ইজারা নেওয়া। এই বাসগুলো নগরীর তিনটি প্রধান রুটে চলাচল করে – বরিশাল ক্লাব, নতুন বাজার এবং নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকটের কারণে বাধ্য হয়েই তাদের বাইরে থাকতে হয়। তাই ক্যাম্পাসে আসার জন্য বাসই তাদের প্রধান বাহন। পর্যাপ্ত বাস না থাকায় সকালে এবং ফেরার পথে শিক্ষার্থীদের চরম ভিড়ের মধ্যে যাতায়াত করতে হয়। অনেক শিক্ষার্থী বাসে উঠতে না পেরে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে অটোতে যেতে বাধ্য হন। যারা বাসে উঠতে পারেন, তাদের গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে যেতে হয়, যা প্রায়শই বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

বাসের বেহাল দশা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ইশিতা রহমান সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, বাসের সংকট তো আছেই, সাথে বাসগুলোর অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। কিছুদিন আগে প্রবল বৃষ্টির সময় বাস ভর্তি স্টুডেন্ট নিয়ে আমরা যাচ্ছিলাম। বৃষ্টির কারণে বাসের সামনের গ্লাস পুরোপুরি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু বাসের ওয়াইপার অকার্যকর থাকায় চালকের জন্য পরিস্থিতি সামাল দেওয়া খুবই কঠিন ছিল। পরে, বাসটি যখন ভিসি গেটের কাছাকাছি আসে, তখন অল্পের জন্য একজন আপু মারাত্মক দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনো এই সংকট নিরসনে কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অন্য এক শিক্ষার্থী তাবাসসুম ছুটি বলেন, বাসের ভোগান্তি তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী, বিশেষ করে সকালে নতুন বাজার রুটের বাসে যাতায়াতের সময় প্রায় সকল শিক্ষার্থীকে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। ফেরার পথে শেষের দুটি বাসের অবস্থা এতটাই খারাপ থাকে যে, দাঁড়ানোর মতো ন্যূনতম জায়গাও থাকে না। যারা বাসে উঠতে পারেন না, তাদের বাধ্য হয়ে অটোতে যেতে হয়। আর যারা উঠতে পারেন, ছেলে-মেয়ে উভয়কেই গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, যা অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংকটের মধ্যে পরিবহন সংকটা বেশ। আমি এর মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বিআরটিসি’র সাথে কথা হয়েছে, তাদের আমি আরেকটা বাসের কথা বলেছি। তাছাড়া সরকার থেকে বাসের জন্য কোনো বরাদ্দ এই মুহুর্তে নেই। তবে আমি বিভিন্ন জায়গায় কথা বলেছি সমস্যাটা সমাধানের জন্য।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!